বাংলাদেশে এসডিজি বাস্তবায়নে সক্রিয় সমর্থন প্রদানের উদ্দেশ্যে সিপিডি ও অক্সফাম ইন্ বাংলাদেশ যৌথভাবে, ইউরোপিয় ইউনিয়নের আর্থিক সহায়তায়, দেশের ১৩টি জেলায় “গণতান্ত্রিক সুশাসনে জনসম্পৃক্ত প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণ” শীর্ষক একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করে আসছে। প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি) বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় স্থানীয় সরকারসমূহের দ্বারা প্রদত্ত বিভিন্ন সেবার কার্যকারিতা বৃদ্ধিতে অবদান রাখা এবং এক্ষেত্রে সরকার বহির্ভূত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সক্রিয় অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা। সুনির্দিষ্ট কর্মসূচীর মাধ্যমে এ লক্ষ্যে স্থানীয় পর্যায়ে সক্ষমতা বৃদ্ধি এ প্রকল্পের অন্যতম উদ্দেশ্য।
বাংলাদেশসহ পৃথিবীর ১৯৩টি দেশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, অন্তর্ভূক্তিমূলক সমাজ ব্যবস্থা এবং পরিবেশ-বান্ধব উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করার জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছে। ২০৩০ সালের মধ্যে ১৭টি অভীষ্ট এবং ১৬৯টি লক্ষ্য বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে যে বৈশ্বিক উন্নয়ন পরিকল্পনা, এজেন্ডা ২০৩০’ গৃহীত হয়েছিল তা অর্জনের জন্য বাংলাদেশ কাজ করে চলেছে।
একথা অনস্বীকার্য যে, একটি স্বচ্ছ এবং জবাবদিহিমূলক নীতি সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া এসডিজির কার্যকর বাস্তবায়নের অন্যতম পূর্বশর্ত। এ প্রেক্ষিতে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী, বিশেষত সামাজিক ও ভৌগোলিক কারণে পিছিয়ে পড়া মানুষ ও নারীদের কণ্ঠস্বর শোনা এবং সে ভিত্তিতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর বিভিন্ন দাবী এবং তাদের চাহিদা ও প্রত্যাশা জাতীয় নীতিসমূহে সঠিকভাবে প্রতিফলিত হয় না। এই কারণেই একটি অংশগ্রহণমূলক শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা প্রয়োজন। যার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ হবে অন্তর্ভূক্তিমূলক আর তৃণমূল জনগণের অংশগ্রহণ হবে অর্থবহ। এ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই এসডিজি বাস্তবায়নে “কাউকে পিছিয়ে রাখা যাবে না” এ অঙ্গীকারের প্রতি দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
প্রকল্পের উদ্দেশ্যসমূহ বাস্তবায়নের জন্য সিপিডি এবং অক্সফাম ইন্ বাংলাদেশ, এসডিজি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সেবা প্রদানকারী বিভিন্ন স্থানীয় কর্তৃপক্ষ, তৃণমূল পর্যায়ের নাগরিক সম্পৃক্ত প্রতিষ্ঠান এবং কমিউনিটিভিত্তিক প্রতিষ্ঠানসমূহের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে বিগত সময়ে বিভিন্ন কর্মকা- পরিচালনা করে আসছে। আশা করা যায় যে, এ প্রচেষ্টার মাধ্যমে এসডিজির লক্ষ্য-উদ্দেশ্য এবং বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণের ক্ষেত্রে তাদের দায়িত্ব ও ভূমিকা সম্পর্কে স্থানীয় পর্যায়ের অংশীজনদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি পাবে ও সক্ষমতা সৃষ্টি হবে। প্রকল্পের বিভিন্ন কার্যক্রমে ভৌগোলিক অবস্থানগত ও প্রাকৃতিক দিক থেকে নাজুক বাংলাদেশের প্রতিকূল অঞ্চলসমূহ এবং সেসব অঞ্চলের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।